এই যে শুনছেন


মন্দিরা রায় 


"টুপ টাপ ঝরে পড়া লোনা
জলের মৃত্যু সাগরে,
বেদনা তিলেতিলে ডুবে  মরে,
যাতনা কিনারা খোঁজে সাঁতরে."
ভাবতে ভাবতে জীবনের
পাশে হেঁটে যেতে যেতে
এক ঝলক হাওয়ার পরশ
সাথে মৃদু কাঁপুনি আমাকে
থমকে দিল 
"এই যে শুনছেন"
পড়ন্ত  রোদ্দুরের সোনালী/ আলোয় দূরে মাইক বাজছে
'কে যেন গো ডেকেছে আমায় ' 
জড়াজড়ি  করে পা দুটো
জড়িয়ে ধরলো
দ্বিধা আর দন্দ্ব।
হাঁসফাঁস নিঃশ্বাসে উৎকণ্ঠা 
এখন তো রেড লাইট এলাকা
সীমানা থেকে মুক্তি পেয়েছে,
যানবাহনের রাস্তায় লাল-
হলুদ   -সবুজ -বাতি 
জীবন সুরক্ষার স্তম্ভ
আবার ফাঁকা নির্জন রাস্তায়
জীবন রক্ষার তাড়নায়
একবুক আগুন চোখের 
লালপরী - হলুদ -
সবুজপরীরা দাঁড়িয়ে থাকে... 
সে রকম কেউ?
"একটু শুনবেন!"
হৃদপিন্ডের ভেতরে ধীরে
ধীরে সূর্য টা ডুবছে
লাল আবির ছড়িয়ে। 
বাঁ দিকে তাকাই 
তিন চারটে গাছ
একটু অক্সিজেন।
ডাইনে তাকাই, চটুল হিন্দি
গানের কলিতে
রিকশাওয়ালা
দ্বিধা আর দন্দ্ব এবার 
কৌতূহলকে সঙ্গে নিয়ে 
বুকে চেপে বসল।
আঁধার থমকে আছে।
"এই যে শুনুন না "
পরিপূর্ণ নারী কণ্ঠ।
লাল আলো জ্বলে উঠল,
কেউ কী অসুস্থ?
হাসপাতাল কত দূরে?
অথবা অনেক কিছুই হতে পারে। 
এই যে শুনছেন --- নারী কন্ঠ 
কোন সুদূর অতীত থেকে,
ফিরে তাকালাম
সূর্যের শেষ আলোটুকু 
সম্বল করে। 
হলুদ সন্ধ্যামনি ফুটে আছে
আমার সামনে। 
পানপাতা মুখের ধূসর চোখে
সোনালী আলো ছড়ালো
"বলতে পারেন
দিগন্ত কোথায়?
দয়া করে রাস্তাটা যদি.".............।


*ছাত্রী, ১৯৯১

Comments

Popular posts from this blog

বৈষম্য